এলিয়েন কি সত্যিই আছে? Do aliens really exist?
হ্যালো ফ্রেন্ডস ইউনিভার্স (Universe) এতটাই বিশাল যে আমরা তার বিন্দুমাত্রই জানতে সক্ষম হয়েছি! তবুও এই মহাবিশ্বের বুকে বিজ্ঞানীরা বারবার খোঁজ করে চলেছে এলিয়েনদের (Aliens)
ভিনগ্রহীদের পাঠানো কিছু সংকেত আমাদের নজরে আসলেও দুর্ভাগ্যবশত তাদের সাক্ষাৎ এখনো মেলেনি, তাই একটা প্রশ্ন থেকেই যায়- সত্যিই কি মহাবিশ্বে এলিয়েন আছে? জানতে হলে শেষ পর্যন্ত সাথে থাকুন!
সাল ১৯৬১ ফ্রাঙ্ক ড্রেক (Frank Drake) নামক এক আমেরিকান অ্যাস্ট্রোনমার (American astronomer) সবার প্রথমে এমন একটি সমীকরণ খুঁজেছিলে সেখানে গণনার মাধ্যমে প্রমাণিত হয় বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে পৃথিবী ছাড়াও প্রাণী আছে! যাকে ড্রেক সমীকরণ (Drake equation) ও বলা হয়ে থাকে! ড্রেক সব তথ্যের উপর ভিত্তি করে জানার চেষ্টা করে পৃথিবীর বাহিরে কোথায় কোথায় জীবন থাকতে পারে! সে পায় আমাদের মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সিতে (Milky Way galaxy) রয়েছে হাজারে হাজারে এমন গ্রহ যেখানে জীবন থাকা সম্ভব! কিন্তু এই সমীকরণটি কে ৪০ বছর পরে ২০০১ সালে বিজ্ঞানীরা আরো আপগ্রেড (upgrade) করে পায় হাজারের বেশি নয় বরং লক্ষেরও বেশি এমন অনেক গ্রহ আছে যেখানে জীবন থাকার সম্ভাবনা প্রবল! অর্থাৎ এটা সত্যি যে পৃথিবী ছাড়াও প্রাণী রয়েছে মহাকাশে! তবে এ বিষয় নিয়ে আলোচনা করার আগে আমাদের সকলকে একটা বিষয় বুঝতে হবে সেটি হল আমাদের বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে এলিয়েন যেকোনো পরিস্থিতিতেই জন্ম গ্রহণ করতে পারে, যা বিজ্ঞানের নিয়ম অনুসারে নাও হতে পারে! কারণ বিশ্বব্রহ্মাণ্ড কে নিয়ে বিজ্ঞান এখনো ততটা উন্নত নয় যতটা পৃথিবীকে নিয়ে! তাই এরকম কোন কারণ নেই যে পৃথিবীর বাইরে জীবন থাকতে পারে না! যেসকল এলিমেন্টস (elements) জীবনের জন্য প্রয়োজন তা শুধুমাত্রই পৃথিবীতেই অবস্থিত তাও সম্ভব নয়! কারণ আমাদের ইউনিভার্সে (Universe) অনেক অনেক গ্যালাক্সি রয়েছে, এবং সে গ্যালাক্সি গুলোতে রয়েছে সূর্যের মতো অবিকল হাজার হাজার নক্ষত্র লক্ষ লক্ষ গ্রহ ও উপগ্রহ তো এটা স্বাভাবিক পৃথিবীর মতো প্রকৃতি কোন না কোন গ্রহতে রয়েছে! যেটা খুঁজে পাওয়া কঠিন বা অসম্ভব হতে পারে! কিন্তু সেই গ্রহের অস্তিত্ব অস্বীকার করা যায় না, কিন্তু এলিয়েনদের খোঁজার আগে আমাদের জানতে হবে কিকি এলিমেন্টস বা পদার্থের প্রয়োজন একটি গ্রহে জীবন জন্মানোর জন্য! ভৌত বিজ্ঞান, রসায়ন বিজ্ঞান এবং জীব বিজ্ঞান অনুসারে মহাকাশে জীবন থাকার ক্ষেত্রে সবথেকে বেশি প্রয়োজনীয় তিনটি পদার্থ হল পানি, কার্বন (Carbon) এবং ডিএনএ (DNA). বিজ্ঞানীরা মানে যে কোন গ্রহে প্রাণী থাকতে হলে সবার প্রথমে থাকতে হবে তরল রূপে পানি, কারণ পানিতেই সবথেকে বেশি রাসায়নিক মিশতে পারে অন্যসব তরলের তুলনায়, তাই তরল রূপে পানি কেই সবচেয়ে সঠিক মানা হয় জটিল অণু তৈরীর ক্ষেত্রে! এই কারণেই বিজ্ঞানীরা মনে করে এ মহাবিশ্বে এলিয়েনদের খুঁজতে হলে সবার প্রথমে অন্য গ্রহে পানি খুঁজতে হবে! দ্বিতীয়তঃ দেখতে হবে সে গ্রহে কার্বন অবস্থিত আছে কিনা কারণ কার্বন পানির সাথে মিশে জটিল অণু তৈরি করতে সক্ষম,তৃতীয়তঃ হচ্ছে ডিএনএ (DNA) ডিএনএ হলো এমন অনু যে নিজেই নিজের প্রতিলিপি বানাতে পারে সহজভাবে বলতে গেলে ডিএনএ কার্বনের সাথে মিশে তরল অণুর সৃষ্টি ঘটাতে পারে!
কিন্তু বাকি অনুরা এটা করতে সক্ষম কিনা তা বিজ্ঞানের পক্ষে জানা এখন পর্যন্ত সম্ভব হয়নি, এটা তো আমরা বুঝতেই পারলাম পানি, কার্বন ও ডিএনএর সাথে যে কোন গ্রহে জীবের জন্ম সম্ভব! বিজ্ঞানীদের মতে এই দরকারি এলিমেন্টস গুলো পৃথিবীতেই শুধু রয়েছে এটা ভাবা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন! বিজ্ঞানীরা এত দিন অব্দি অনেক গ্রহেই জল থাকার সম্ভাবনা আবিষ্কার করেছে, আবার কোথাও পেয়েছে কার্বন কিন্তু মহাকাশে এমন অনেক নক্ষত্র ও গ্রহ রয়েছে তাদের প্রত্যেককে এখনো আবিষ্কার করতে পারেনি বিজ্ঞান, যেমন আমাদের মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সিতেই রয়েছে এমন অনেক গ্রহ রয়েছে সূর্যের মতো এমন অনেক নক্ষত্র যেগুলো এ পৃথিবী থেকে বহু আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত শুধু তাই নয় এই ব্রহ্মান্ডে এমন মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির মত রয়েছে লক্ষ লক্ষ গ্যালাক্সি স্বাভাবিকভাবে পৃথিবীতে যে ভৌত বিজ্ঞানের নিয়ম প্রয়োগ হয় কোন না কোন গ্রহে এমন নিয়ম কার্যকরী হয় না তা অনুমান করা ভিত্তিহীন! অর্থাৎ এটা সত্যি যে পৃথিবী ছাড়াও প্রাণী রয়েছে এই মহাকাশে! তবে সেই প্রাণীর আকার আকৃতি আমরা যা কল্পনা করি তার থেকেও ভিন্ন হতে পারে, তারা কীটপতঙ্গ, পোকামাকড় এমনকি জন্তুও হতে পারে আবার এটাও হতে পারে তারা আমাদের থেকে অনেক উন্নত সভ্যতার কিন্তু এবার প্রশ্ন হল তারা কি এই পৃথিবীতে কখন আসবে আমরা কি তাদের দেখা পাবো চলুন এ বিষয়ে বিশ্লেষণ করা যাক-বিজ্ঞানীরা এ ব্রহ্মান্ডের বুকে প্রতিনিয়তই উন্নত এলিয়েন্স দের খোঁজ করে চলেছে তাই বিজ্ঞান যুগের পর যুগ ধরে আপগ্রেড হচ্ছে কেপলার (Kepler space telescope) এর মত যন্ত্র কে পাঠিয়ে অন্য গ্রহের খোঁজ মিলেছে তবে তা সীমিত অর্থাৎ বলা যেতে পারে আমাদের মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির ০.০১ শতাংশ গ্রহকেই খুঁজতে সক্ষম হয়েছে! আমাদের এই পৃথিবীতে বিজ্ঞানের খোঁজকর্তা মানুষ তাই আমরা পৃথিবীর সবথেকে অ্যাডভান্সড প্রাণী তা হওয়ার সত্তেও আমাদের মহাকাশের উপর হওয়া রিসার্চ (research) সীমিত এবার একবার ভেবে দেখুন তো তাদের কথা যারা বহু আলোকবর্ষ দূরে থাকা সত্ত্বেও আমাদের খোঁজ করতে পারে ভেবে দেখুন তো তাদের টেকনোলজির মান কি! হ্যাঁ ঠিকই ধরেছেন যারা বহুদূর থেকে আমাদের কাছে আসতে সক্ষম তাদের টেকনলজি আমাদের পৃথিবীর টেকনোলজির থেকে কয়েক কোটি গুণ এগিয়ে! এবার একটু ভেবে দেখুন মানুষ কি কখনো পিঁপড়ের খোঁজ করতে চাঁদে পাড়ি দিবে? না কখনোই না! তেমনি এটাই সত্যি যেসব এলিয়েন পৃথিবীতে পৌঁছানোর ক্ষমতা রাখে তাদের কাছে পৃথিবী ও আমাদের কোন মূল্য নেই!তারা এতটাই উন্নত যে তারা চাইলে সমগ্র পৃথিবীর যেকোনো জিনিস নিমিষেই নিজেরা তৈরি করে নিতে পারে! আর তাদের এসব কাজের জন্য হাজারো রোবট থাকবে!আর রইল পৃথিবীর সভ্যতা সেগুলো তাদের কাছে শুধুমাত্র পিঁপড়ের সভ্যতার মতোই সভ্যতা! আমরা তাদের কাছে শুধুমাত্র নিকৃষ্ট মানের কিছু অনুন্নত জীব, অর্থাৎ অ্যাডভান্সড এলিয়েন এই গ্রহে কোন বিষয়ে আকৃষ্ট অনুভব করবে না তবে যদি এটা ভাবা হয় তারা নতুন কিছু আবিষ্কারের উদ্দেশ্যে এই পৃথিবীতে পাড়ি দেবে তাহলে তাদের অতি অ্যাডভান্সড স্পেসশিপ বানাতে হবে!যা আমাদের কল্পনারও বাইরে, যে স্পেসশিপে লক্ষ লক্ষ বছরের ঋণ ধোন মজুদ থাকবে কারণ এক আলোকবর্ষ সমান প্রায় ১০ টিলিয়ন কিলোমিটার দূরত্ব! তবুও যদি সেই অ্যাডভান্স স্পেসশিপ আলোকরশ্মির গতিতে এ পৃথিবীর দিকে এগিয়ে আসে তাতেও তাদের লক্ষ লক্ষ বছর লেগে যাবে! আর সেই অবস্থায় তাদের স্পেসশিপের মধ্যে প্রজনন চালাতে হবে, এলিয়েন্স খাবার খেলে তাদের স্পেসশিপের মধ্যেই চাষাবাদ করতে হবে! স্পেসশিপ এ ডক্টর, মেকানিক রাখতে হবে এবং বিশেষত পুরুষ ও মহিলাদের বাচ্চা জন্ম দিতে হবে এবং জন্মানোর পর সে বাচ্চাদের আবার ডক্টর, ইঞ্জিনিয়ার বা চাষী বানাতে হবে! শুনলে এগুলো অদ্ভুত লাগলো তাদের এগুলোই করতে হবে বারবার কিন্তু তারা কি এসব খাটনি করবে পিঁপড়ের মতো সভ্যতা কে আবিষ্কার এর জন্য? কিন্তু এসব জানার পরেও বিজ্ঞানীরা নিরাশ হয়নি! কারণ এলিয়েন পৃথিবীতে আসার আরেকটা শর্টকাট আছে যেটি ওয়ার্মহোল (wormhole) নামে পরিচিত,ওয়ার্মহোল যে কোন বস্তুকে নিমিষেই অন্য কোন গ্যালাক্সি বা অন্য কোন নক্ষত্রমন্ডলে পৌঁছে দিতে পারে! কিন্তু প্রশ্ন হল যে সভ্যতা ওয়ার্মহোল আবিষ্কার করতে পারে তারা পৃথিবীর সভ্যতার তুলনায় কোটি কোটি বছর এগিয়ে থাকা সত্ত্বেও পৃথিবীর সভ্যতার প্রতি আকৃষ্ট হবে কেন? তাদের কাছে ন্যানো রোবটস এর মত উন্নত প্রযুক্তি থাকবে তো তারা কেন পৃথিবীতে আসবে?তবে যাই হোক হতে পারে আগামী কয়েক বছরে আমাদের টেকনোলজি এতটা এগিয়ে যাবে যে আমরাই হয়তো বা এলিয়েনদের কাছে আগে পৌঁছে যাব! তাই আশা তো করাই যায় মানুষ ও এলিয়েনদের সাক্ষাৎ একদিন না একদিন হবেই!